কুলিয়ারচর প্রতিনিধি, মোঃ মাইন উদ্দিন : কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর উপজেলার ফরিদপুর ইউনিয়নে মোঃ ছায়েদুর রহমান ওরুফে সবুজ (৪৪) নামের এক আওয়ামী লীগ নেতাকে চৌকিদার দিয়ে ধরিয়ে নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের রুমে আটকিয়ে মারধোর করার প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছে এলাকাবাসী। এর অংশ হিসেবে রবিবার (১১ ডিসেম্ভর) বিকেলে ফরিদপুর ভূইয়া বাড়ী সংলগ্ন মাঠে মানববন্ধন বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।

বিক্ষোভ সমাবেশে ফরিদপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ শাহ আলম, থানা আওয়ামীলীগের সদস্য মোঃ রেফায়েত উল্লাহ, তুফাজ্জল হোসেন, ফরিদপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের যুগ্ন-সাধারণ সম্পাদক মাসুদুর রহমান মুছা, ফরিদপুর ইউনিয়ন আবদুল হামিদ ভূঞা উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির অভিভাবক সদস্য হাজী মোঃ সোলাইমান, আওয়ামী লীগ নেতা মোঃ ওমর ফারুক ভূইয়া, ফরিদপুর ইউনিয়ন ৮ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ আবু তাহের, সাধারণ সম্পাদক গোলাপ মিয়া, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মোঃ মিলন মিয়া, যুবলীগ নেতা মোঃ রুবেল হোসেন, মোঃ হানিফ মিয়া, মোঃ সেলিম মিয়া ও স্থানীয়া উপস্থিত ছিলেন। মোঃ ছায়েদুর রহমান ওরুফে সবুজ হলেন, ফরিদপুর ইউনিয়নের আলালপুর গ্রামের মৃত আব্দুল মুতালিব খানের পুত্র।

এর আগে এ ঘটনায় সবুজ মিয়া বাদী হয়ে কুলিয়ারচর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছে। তিনি অভিযোগে উল্লেখ করেন, শনিবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুর ১২ টার দিকে আড়াই লক্ষ টাকা নিয়ে বাড়ি থেকে তার কর্মস্থল ভৈরবে যাওয়ার পথে আলালপুর গ্রামের মেরাজ মিয়ার বাড়ির সামনে আসা মাত্র পূর্ব থেকে উৎপেতে থাকা ইউনিয়ন পরিষদের চৌকিদার ও চেয়ারম্যানের লোকজন ওই আওয়ামী লীগ নেতা সবুজ এর পথরোধ করে তাকে মারধোর করে। পরে তাকে টেনে হেচরে ফরিদপুর ইউনিয়ন পরিষদের অফিস কক্ষে নিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং একটি লাঠি দিয়ে নির্মম ভাবে আঘাত করে তার সাথে থাকা আড়াই লাখ টাকা ও একটি মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। খবর পেয়ে স্বামীকে উদ্ধার করতে আওয়ামী লীগ নেতার স্ত্রী স্কুল শিক্ষিকা মোছাঃ কামরুন্নাহার (৩৬) ইউনিয়ন পরিষদে গেলে সেও রেহায় পায়নি। চেয়ারম্যান তার চুলের মুটি ও শরীরের কাপড় চোপড়ে ধরে টানা হেচরা করে উলঙ্গ করে শ্লীলতাহানি করে তার সাথে থাকা একটি মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। পরে স্থানীয়রা আহত ছায়েদুর রহমান সবুজকে উদ্ধার করে কুলিয়ারচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে চিকিৎসা করান। এ ঘটনায় ওই দিন আহত আওয়ামী লীগ নেতা মোঃ ছায়েদুর রহমান সবুজ বাদী হয়ে চেয়ারম্যান এস.এম আজিজ উল্ল্যাহ (৫০) ও ফরিদপুর ইউনিয়নের দায়িত্ব থাকা গ্রাম পুলিশ সহ ১১ জনের নামে একটি অভিযোগ দায়ের করে।

ইউপি চেয়ারম্যান এস.এম আজিজ উল্ল্যাহ’র বিরুদ্ধে এর আগেও এই ইউপি সচিবকে মারধোর করার অভিযোগ উঠেছিল। যা পরে ক্ষমা প্রর্থনার মধ্যদিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারে মাধ্যমে মিমাংসা হয়। এছাড়া আরও একাধিক ব্যক্তিকে চৌকিদার দিয়ে ধরিয়ে পরিষদে এনে মারধর করাসহ মারধরের হুমকি দিয়েছে এমমও শোনা যাচ্ছে।

অভিযোগের সত্যতা জানতে কুলিয়ারচর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি অভিযোগ পেয়েছেন জানিয়ে বলেন, অভিযোগ তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।